শ্বসন একধরনের জারণ-বিজারণ প্রক্রিয়া। শ্বসনিক উপাদান নির্দিষ্ট পথে পর্যায়ক্রমে রূপান্তরিত হয়। প্রতিটি ধাপ স্বতন্ত্র এনজাইমে নিয়ন্ত্রিত। পর্যায়ক্রমিক ধাপ অতিক্রমকালে প্রাথমিকভাবে কিছু শক্তি ব্যবহৃত হয়; কিন্তু পরবর্তীতে জারণ-বিজারণ পথে উচ্চ শক্তি সম্পন্ন কিছু রাসায়নিক উপাদান অর্থাৎ ATP-এর সৃষ্টি হয়। এই ATP-ই তখন জীবের সবধরনের শারীরবৃত্তীয় কাজের শক্তি যোগায়। সুতরাং শ্বসন হচ্ছে শক্তি সঞ্চারণকারী একটি শক্তিশালী জারণ- বিজারণকারী বিক্রিয়ার সমষ্টি মাত্র।
যে জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়ায় O2-এর উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে কোষের জৈব খাদ্য জারণের মাধ্যমে শক্তি নির্গত করে এবং উপজাত দ্রব্য হিসেবে CO2 ও H2O উৎপন্ন করে তাকে শ্বসন বলে। শ্বসনের সমীকরণটি নিম্নরূপ-
C6H12O6 + 602 + 6H2O → 6CO2 + 12H2O 38 ATP (শক্তি)
শ্বসনস্থল : জীবদেহের প্রতিটি কোষেই দিনরাত্রি ২৪ ঘন্টা শ্বসন সংঘটিত হয়। প্রয়োজনীয় এনজাইম থাকায় কোষের সাইটোপ্লাজমে শ্বসনের প্রাথমিক পর্যায় সম্পন্ন হয়। দ্বিতীয় পর্যায় বা শক্তি উৎপাদন পর্যায় কোষের মাইটোকন্ড্রিয়াতে সংঘটিত হয়। শ্বসন প্রক্রিয়ায় যে সব বস্তু জারিত হয়ে CO, ও শক্তি উৎপাদন করে সে সব বস্তুকে শ্বসনিক বস্তু বলে প্রধানত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য শ্বসনিক বস্তু হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তবে অনেক সময় আমিষ, চর্বি ও বিভিন্ন জৈব এসিড শ্বসনিক বস্তু হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
শ্বসনের প্রকারভেদ : শ্বসন প্রক্রিয়া অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে সংঘটিত হয়। অক্সিজেনের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদে দুধরনের শ্বসন সংঘটিত হয়, যেমন-
ক. সবাত শ্বসন : এ শ্বসনে মুক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং বেশি পরিমাণ শক্তি উৎপাদিত হয়।
খ. অবাত শ্বসন : এ শ্বসনে যুক্ত অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না এবং অল্প পরিমাণ শক্তি উৎপাদিত হয়।
আরও দেখুন...